Skip to main content

জাকসু নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদলের প্যানেল, অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন তিন শিক্ষক

অনিয়ম   ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে জাকসু নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। এদিকে, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন তিন শিক্ষক সর্বশেষ খবর পেতে চোখ রাখুন ২৪/৭ ঘন্টা নিউজ পোর্টালে। জাহাঙ্গীররনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। ভোট গ্রহণে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪ টার দকে জাবির মওলানা ভাসানী হলে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী। এ সময় প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মো. মেখ সাদী হাসানসহ অন্য প্রার্থীরা ও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় ব্যাপক অনিয়ম, ভোট করচুপি ও প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের কারণে নির্বাচন সুষ্টুভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এ সময় বৈশাখী বলেন, শুরু থেকেই আমাদের আশঙ্কা ছিল এটি সাজানো নির্বাচন হবে। আমরা বারবার প্রশা্সনকে জানিয়েছিলাম যে সুষ্ঠ নির্বাচন হবে না।, কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি উপেক্ষা করেছে।

ডাকসু নির্বাচন জাতীয় ভোটের প্রতিফলন করবে না: মান্না


নাগরিক ঐক্যের সভাপতি গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, "এই ভোট জাতীয় ভোটের প্রতিফলন করবে না। আমি দুইবার ডাকসুর ভিপি হয়েছি। খুব পপুলার ছিলাম ছাত্রদের মধ্যে। কিন্তআমার পলিটিক্যাল পার্টি হয়নি। আমি তো ক্ষমতায় যায়নি। আমার পার্টি তো ক্ষমতায় যেতে পারিনি।" 

তিনি বলেন, "ডাকসুতে জিতলেই যে তারা জাতীয় রাজনীতিতে বিরাট কিছু করে ফেলবে সেরকম নয়। কিন্তু তারপরে মনে করে দেখেন, আমার সেই সংগঠন ছিল না। কিন্তু এবার যারা জিতেছেন তাদের তো সংগঠন আছে। তারা সেটাকে ট্রান্সলেট করতে পারবেন। একদম নিচের লেভেলে। যেই চিন্তার ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রী ভোট দিল, এরপর তো রাকসু হবে, জাকসু হবে, চাকসু হবে, কিসের প্রতিফলন দেখবেন ভাবেন। আমরা কি এরকম কোন কাজ করেছি? আপনারা, আমি, আমরা সবাই মিলে বলছি ওরা গুপ্ত রাজনীতি করেছে। খুবই অন্যায়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “গত ১৫-১৬ বছর ধরে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, এই দেশে যে একটা ভালো ভোট হতে পারে, শেষ পর্যন্ত ভোট শেষ হতে পারে এইরকম ধারণাই মানুষ করতে পারেনি। পরিস্থিতি তো এরকম দাঁড়িয়েছিল যে মানুষই আমাদের কাছে বলছিল, শেখ হাসিনাকে কেউ সরাতে পারবে না। সেই শেখ হাসিনাই চলে গেছে।

তারপরে একটা ভালো ভোট করবার জন্য আমরা সবগুলো পার্টি মিলে চর্চা করছি। এখনও মানুষ আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে ভাই ভোট কি হবে? ভালো ভোট করবার জন্য যে সংস্কার তার জন্য ঐক্যমত কমিশন আগামীকালকে আবারও বসবে।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “গতকালকে যে নির্বাচন হয়েছে যদি এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন আর গোলমাল শুরু না হয় তাহলে মানুষ মনে করবে ভালো নির্বাচন তো সম্ভব। সেটা ছাত্ররা দেখাবে। আমি এই জন্যে তাদেরকে (ছাত্রদের) ধন্যবাদ দেই। জানি এই নির্বাচনের ফলাফল অনেকের জন্য রীতিমত শকিং। অনেকেই এরকম ধারণাই করতে পারেনি। কেউ কেউ অবশ্য বলছে যে এটার মধ্যে জোচ্চুরি, জালিয়াতি ইত্যাদি আছে। কিন্তু তারপরে ফলাফলটা ঘোষণা হয়েছে।

মান্না বলেন, “যারা কালকে বিকেল বা সন্ধ্যা থেকে বিক্ষোভ করছিলেন তারা এখন আপাতত প্রশমিত বলে মনে হচ্ছে। আমি আবার এই ডাকসু নির্বাচনের একটা মহামূল্যবান পণ্য হয়ে গেছি। আমি আবার দুইবারের ভিপি। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সবাই প্রশ্ন করেভাই কী হতে পারে বলেন তো? আমি কিন্তু কিচ্ছু বুঝতে পারিনি। আমি দুজন মানুষকে পেয়েছি। একজন হচ্ছেন আমার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক। উনি গতকাল সন্ধ্যার সময় আমাকে বলেছেন শিবির জিতবে। আমার বিশ্বাসই হতে চায়নি। মেয়েরা ভোট দেবে? ওরা কপালে টিপ নিতে দেয় না, সুন্দরভাবে বেরতে দেয় না, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে দেয় না, ওদের কেন ভোট দেবে? উনি বলতেন, না ওদেরকেই ভোট দেবে। তখন আমার মনে হয়েছিল আমি তো চাকসুরও জিএস ছিলাম। আমার পরে চাকসুতে ভিপিতে জিতেছিলেন জসিম। উনি গেছেন ভোটের আগে লেডিজ হলে। সব মেয়েরা ঘিরে ধরেছে। ভাই কি আপনারা নাকি আমাদেরকে বোরকা পড়তে বাধ্য করবেন? আমাদের মাথায় টিপ দিতে দেবেন না। সন্ধ্যার পরে বেরোতে যেতে দেবেন না। উনি কথা বলেছিলেন অনেকক্ষণ বসে বসে তাদের সাথে। এরপরে মেয়েরা নাকি তার কথায় কনভেন্স হয়ে তাকে ভোট দিয়েছিল।

ছাত্রসমাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “জেনজি নিয়ে এত কথা হলো। নেপালে জেনজি ইতিহাস রচনা করে দিয়েছে। এই জেনজি পুরা আফ্রিকাতে ল্যাটিন আমেরিকাতে ইতিহাস তৈরি করেছে। উগান্ডাতে জেনজির একটা বক্তব্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। তারা বলেছে, এই ক্রান্তিকর অপমানজনক জীবনযাপন করতে করতে আমরা বিরক্ত। এবারে কিছু সাহস দেখাতে চাই।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, "মিলিয়ে দেখেন এই গেস্ট রুম কালচার, বড় ভাইদের সালাম করা, প্রোটোকল দেওয়া, ভর্তি পরীক্ষা না হলেও তারপরেও ভর্তি হতে পারবে, পরীক্ষা দিতে না দেওয়া। সব দেখে অপমানিত ছাত্রসমাজ মনে করেছে এই জীবনের মধ্যে আমরা সাহস দেখাব। চব্বিশে এত বড় সাহস কোথা থেকে আসলো? সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো একবারও সাহস দেখাতে পারেনি। ঘুরে দাঁড়ায়নি। বিশাল সমাবেশ হবে, সরকার (হাসিনা সরকার) বলেছে করতে দেব না।

এই প্রজন্ম এক বছর পরে মনে করছে, এই দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি আমরা দেখতে চাই না। এই যে মিথ্যাচারের রাজনীতি, এইযে এক বছর যেটা দেখলাম চাঁদাবাজি দখলদারিত্বের রাজনীতি এবং ক্ষমতায় যাবার আগেই ক্ষমতায়িত হয়ে গেছে এমন হাবভাব করার এই রাজনীতি দেখতে চায় না। অতএব তারা নতুন কিছু করতে চায়। ঘটনাটা এটাই ঘটল।

Comments

Popular posts from this blog

বিক্ষোভকারীদের আগুনে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর মৃত্যু

  বিক্ষোভকারীদের দেওয়া আগুনে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালনাথ খানালের স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকর নিহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম খবরহাব জানিয়েছে , মঙ্গলবার ( ৯ সেপ্টেম্বর ) আন্দোলনকারীরা তার বাড়িতে ঢুকে আগুন দেয়। ওই সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী ঘরের ভেতর ছিলেন। দাল্লু নামের ওই এলাকায় অবস্থিত বাড়িতে শতশত মানুষ প্রবেশ করেন। ওই সময় বাড়িটি ঘিরে ফেলে তাতে আগুন দেন তারা। তখন ভেতরে আটকা পড়েন রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকর। তাকে উদ্ধার করে কীর্তিপুর বার্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই সময় তার অবস্থা বেশ গুরুতর ছিল। হাসপাতালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। গতকাল সোমবার ১৯ বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার পর আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সহিংস হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তাদের আন্দোলনের তীব্রতা বাড়লে কেপি শর্মা ওলি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। এরপর সহিংসতার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের মূল ভবনে আগুন দেন। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের বাড়িতে গিয়ে গিয়ে তাদের খুঁজে...

ডাকসুতে জয়ী শিবিরের প্রার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের ভোটের ব্যবধান কতটা।

  ডাকসু শীর্ষ তিন পদে বিজয়ী শিবিরের সাদিক কায়েম, এসএমফরহাদ ও মহিউদ্দীন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসুর নির্বাচনে এবার অভাবনীয় জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। জুলাই গণ - অভ্যুত্থানের পর ডাকসুর প্রথম এই নির্বাচনে ওই প্যানেলের প্রার্থীরা ভিপি , জিএস , এজিএস এবং ১২টি সম্পাদক পদের নয়টিতেই জয়ী হয়েছেন। শুধু তিনটি সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ছাত্রশিবিরের নির্বাচিতদের সঙ্গে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ছাত্রদলের প্রার্থীদের ভোটের ব্যবধান অনেক। প্রায় সবকটি হলের ভোটাররা কেন্দ্রীয় ভিপি ও জিএস পদে শিবিরের দুই প্রার্থীকে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে মেয়েদের হলগুলোতে শিবিরের প্রার্থীরা পেয়েছেন নজিরবিহীন সমর্থন। ভোটের লড়াইয়ে শিবিরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রার্থীরা। তবে কোনো পদেই তারা জয়ের মুখ দেখেননি। সম্পাদকীয় যে তিনটি পদ শিবিরের হাতছাড়া হয়েছে সেগুলোতে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন...